Borax (বোরাক্স)
বোরাক্সের (BORAX) অপর নাম – সোডিয়াম টেট্রাবোরেট (Sodium Tetraborate Na2B407+10H20)
বোরাক্সের (BORAX) চরিত্রগত লক্ষণ-
- চঞ্চলচিত্ত, সহজে ভীত, অল্পতেই কাতর।
- নিম্নগতিতে ভয়, শিশুকে নিয়ে সিঁড়ি দিয়ে নামতে আরম্ভ করলে শিশু তাকে জড়িয়ে ধরে ও কেঁদে উঠে, ঘুমন্ত শিশুকে শোয়াতে গেলে চমকে উঠে।
- স্তন্যপান করবার সময়, পায়খানা ও প্রস্রাব করবার পূর্বে শিশু কান্না করে।
- সামান্য শব্দ, এমন কি দূরের শব্দ শুনে রোগী চমকে উঠে।
- কোন কাজ করার সময় উক্ত কাজের বিষয়ে চিন্তা করলে বমিভাব হয়।
- মুখের ভিতর সাদা প্রলেপ, ক্ষত ও উত্তাপ, মুখের ঘায়ের জন্য শিশু স্তন্যপান করতে চায় না।
বোরাক্সের (BORAX) নির্দেশক লক্ষণ-
মন – তীব্র মানসিক আতঙ্ক, বিশেষ করে নীচের দিকে নামার সময়, দোলনায় দোলার সময়, কোলে করে সিঁড়ি দিয়ে নীচের দিকে নামার সময়, এবং শোবার সময় নীচের দিকে নামার সময় ভীতি পূর্ণ মুখমণ্ডল, রোগীকে শুয়ে দেবার সময় চমকিয়ে উঠে ও হাত উপর দিকে ছোঁড়ে, যেন রোগীর পড়ে যাবে বলে ভয় হয়েছে। অত্যন্ত স্নায়রি খুব সহজেই ভয় পায়।
হঠাৎ কোন শব্দে অনুভূতিপ্রবণ। বন্দুকের শব্দে তীব্র ভয়ভাব এমনকি শব্দ যদি বহুদূরেও হয়ে থাকে। বজ্রের শব্দে ভয়।
মাথা – অবিরাম বেদনা, তৎসহ বমি বমি ভাব ও সারা শরীরে কম্পন। মাথার চুল অগ্রভাগের দিকে জট পাকিয়ে যায়, কিছুতেই তা পৃথক করা যায় না।
চোখ – চোখের পাতার চুলগুলি ভিতর দিকে বেঁকে যায়। চোখের পাতা প্রদাহিত চোখের পাতা, চোখের তারার উপর কেটে যায়। চোখের পাতা পিছনদিকে ঘুরে যায়।
কান — সামান্য শব্দে অত্যন্ত অনুভূতি প্রবণ, কিন্তু তুলনামূলক ভাবে উচ্চস্বরে শব্দে ততটা বিরক্ত হয় না।
নাক – যুবতী স্ত্রীলোকের নাক লালবর্ণযুক্ত।(ট্রোমকার্ব)। লাল ও উজ্জ্বল স্ফীতি তৎসহ দপপানি ও টানভাবের মত অনুভূতি। নাকের অগ্রভাগ স্ফীত এবং ক্ষতযুক্ত শুষ্ক মামড়িযুক্ত।
মুখমণ্ডল – ফ্যাকাশে, মাটির মত, তৎসহ মুখমণ্ডলে কষ্টের ছাপ। স্ফীতি, তৎসহ নাকে ও ঠোঁটে ফুস্কুড়ি। মুখমণ্ডল মাকড়সার জালের দ্বারা ঢাকা এই জাতীয় অনুভূতি।
মুখগহ্বর – মুখগহ্বরের ভিতর সাদা রঙ্গের ক্ষত। সাদা ছত্রাকের মত উদ্ভেদ। মুখগহ্বরে ভিতর উত্তপ্ত ও স্পর্শকাতরতা, খাবার সময় এবং স্পর্শ কালেই ক্ষতস্থান থেকে রক্তপাত হয়ে থাকে। মাড়ীতে যন্ত্রণাদায়ক ফোঁড়া। শিশু মায়ের দুধ পান করার সময় কাঁদে। মুখে আস্বাদ তিতো। (ব্রায়োনিয়া, পালসেটিলা, কুপ্রাম)।
পাকস্থলী ও উদর – খাবারের পরে উদরের স্ফীতি, বমি। পাকাশয়িক শূলবেদনা, যা জরায়ুর গোলযোগ থেকে উৎপন্ন হয়। বেদনা, যেন মনে হয় উদরাময় দেখা দেবে।
মল – পাতলা, শিশুদের দূর্গন্ধযুক্ত মল।
উদরাময়, দূর্গন্ধযুক্ত, মলত্যাগের আগে শূল বেদনা, শ্লেষ্মাযুক্ত মল তৎসহ মুখের টাটানি ব্যথাযুক্ত সাদা ঘা।
প্রস্রাব – উত্তপ্ত, লিঙ্গের ছিদ্রের মুখে তীব্র বেদনা। ঝাঁঝাল গন্ধযুক্ত। শিশু প্রস্রাব করতে ভয় পায়, প্রস্রাবের পূর্বে চীৎকার করে উঠে (সার্নাপ)। কাপড়ের উপর ছোট ছোট লাল কণা থেকে যায়।
স্ত্রীরোগ –
প্রসব বেদনা, তৎসহ বারে বারে ঢেকুর তোলা। স্তন থেকে প্রচুর পরিমাণে দুধ বেরিয়ে থাকে। (ক্যাল্কেরিয়া কার্ব, কোনিয়াম বেলেডোনা)। শিশু যে দিকের স্তন্য পান করে, তার বিপরীত দিকের স্তনে বেদনা।
প্রদর স্রাব, অনেকটা ডিমের সাদা অংশের মত,তৎসহ রোগী মনে হয় যেন গরম জলের ধারা বয়ে চলেছে। ধাতুস্রাব নির্দিষ্ট সময়ের অনেক আগে, প্রচুর তৎসহ মোচড়ানি, বমি বমি ভাব এবং পাকস্থলীতে বেদনা, বেদনা কোমর পর্যন্ত প্রসারিত হয়।
ধাতুস্রাব কালে বেদনা। বন্ধ্যাত্ব। সহজে গর্ভসঞ্চারে সাহায্য করে। ভগাঙ্কুর স্ফীতি বলে মনে হয় তৎসহ খোঁচা মারার মত বেদনা। যৌনিপথের চুলকানি ও একজিমা।
শ্বাস-প্রশ্বাস – দমবন্ধ করার মত তীব্র কাশি, শ্লেষ্মা, ছাতা পড়ার মতস্বাদ ও গন্ধযুক্ত। বুকের ভিতর সূঁচ ফোটার মত বেদনা তৎসহ শ্বাস নেওয়া ও কাশি। কাশি তৎসহ ছাতা পড়ার মত স্বাদযুক্ত, বক্ষাবরক
ঝিল্লীর বেদনা, ডানদিকের উপরের অংশে কষ্ট বেশি হয়। শুয়ে থাকার সময় শ্বাস বন্ধ হয়ে আসে, ঐ সময়ে রোগী লাফিয়ে উঠে পড়ে শ্বাস নিতে বাধ্য হয়, যার ফলে বুকের ডানদিকে বেদনা হয়ে থাকে।সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠার সময় শ্বাস বন্ধ হয়ে আসে।
অঙ্গ-প্রতঙ্গ – মনে হয় হাতে মাকসাড় জাল জড়িয়ে আছে। হাত, হাতের আঙ্গুল ও সন্ধিস্থানের পিঠে চুলকানি। বুড়ো আঙ্গুলের অগ্রভাগ দপদপকর বেদনা। পায়ের তলায় সূঁচ ফোটার মত বেদনা। গোড়ালিতে বেদনা, পায়ের আঙ্গুলের গোলাকার অংশের প্রদাহ। হাতের ও পায়ের আঙ্গুলের একজিমা তৎসহ নখগুলি ধ্বংস হয়ে যায়।
চামড়া – সোরিয়াসিস। মুখমণ্ডলের ঈরিসিপেনাল। হাতের আঙ্গুলের সন্ধিস্থানের পিঠে অংশে চুলকানি। অস্বাস্থ্যকর চুলকানি, সামান্য আঘাত পুঁজ হয়ে উঠে। হার্পিস (রাস)। ঈরিসিপেলাসের মত প্রদাহ। তৎসহ স্ফীতি এবং চামড়ার টানটান। শতিস্ফোটক, মুক্ত বাতাসে আরাম। হাতে এবং হাতের আঙ্গুলে ট্রেড ঈরাপশন, চুলকানি ও খোঁচা মারার মত বেদনা। মাথার চুলে জটা।
ঘুম – কামোত্তেজনার স্বন দেখে। কিছুতেই গরমের জন্য ঘুমাতে পারে না, বিশেষ করে মাথায় গরম ভাব। ঘুমের ভিতর ভয় পেয়ে কেঁদে উঠে (বেল)।
বৃদ্ধি- নিম্নগতিতে, শব্দে, ধূমপানে, উষ্ণ আবহাওয়ায়, ধাতুস্রাবের পর।
উপশম – চাপে, সন্ধ্যায়, ঠাণ্ডা আবহাওয়ায়।
সম্বন্ধ – এসেটিক অ্যাসিড, ভিনিগার এবং মদ, এইগুলি এই ঔষধের প্রতিবন্ধক।
তুলনীয় – ক্যালকারিয়া কার্ব, ব্রায়োনিয়া, স্যানিকিউলা, সালফিউরিক অ্যাসিড।
বিঃ দ্রঃ হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার জন্য হোমিও চিকিৎসকের নির্দেশ মতো ঔষধ সেবন করুন।
( হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা বই মেটেরিয়া মেডিকা হতে প্রকাশিত )